গতকাল উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র পুঙ্গি-রি ধ্বংস করে ফেলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করে সাংবাদিকদের একটি দল। সে দলে ছিলেন চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবাদিকরা। সেই দলেরই একজন ব্রিটেনের স্কাই নিউজের সাংবাদিক টম চেশায়ার। তিনি জানান, কেন্দ্রটিতে খুব বড় ধরনের বিস্ম্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে বেশ কয়েক দফা বিস্ম্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে কেন্দ্রটি।
পুঙ্গি-রি পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্রটি উত্তর কোরিয়ার হামগইয়ং প্রদেশের একটি পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত, যা চীন সীমান্তের খুব কাছাকাছি।
উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে কোনো স্বাধীন পর্যবেক্ষককে আমন্ত্রণ না জানানোয় এরই মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দুই দলে ভাগ হয়ে গেছেন বিশেষজ্ঞরা। একদল বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কথামতো পিয়ংইয়ং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের দিকে এগোচ্ছে। উত্তর আসলেই পরিবর্তন চায়। কিমের সঙ্গে বৈঠক হবে কি-না, সে সিদ্ধান্ত এখন ওয়াশিংটনের। পর্যবেক্ষকদের আরেকটি দলের আশঙ্কা, এরই মধ্যে পরমাণু বোমা অর্জন করে ফেলেছে উত্তর কোরিয়া। তাই কেন্দ্রটি ধ্বংস করা বা না করাতে তেমন কিছুই যায় আসে না। তারা যে কোনো সময় আবার ওই রকম কেন্দ্র তৈরি করতে পারবে।
গত কয়েক মাসের চেষ্টায় দীর্ঘ দিনের শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক এবং বাগ্যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকের খবরটি বিশ্বে শান্তির বার্তা নিয়ে আসে। এর জেরে গত মাসের শেষদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে ছয় দশক পর উত্তরের কোনো নেতা হিসেবে বৈঠকে বসেন কিম। ওই বৈঠকের পরই ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়। তবে গত কয়েক দিনে আবারও তীব্র বাগ্যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠক না হওয়ার তীব্র আশঙ্কা দেখা দেয়। আর গতকাল ট্রাম্প সেই আশঙ্কাকেই সত্যে পরিণত করলেন। বাতিল করে দেন শীর্ষ বৈঠকটি।
এর আগে বিশ্নেষকরা আশা করছিলেন, বৈঠকটি যথাসময়ে হবে। কারণ, চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিমের বৈঠকের জায়গাও পরিদর্শন করেছিল।
তবে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত হতে হবে বলে দাবি করে আসছে ওয়াশিংটন। কিন্তু পিয়ংইয়ং সাফ জানিয়ে দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন থেকে যতদিন নিজেদের নিরাপদ মনে না হবে, ততদিন পরমাণু অস্ত্রমুক্ত হবে না তারা।